রবিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২১

কালোজিরা তেল


প্রাচীনকাল থেকে কালোজিরা মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক এবং প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। এজন্য একে সকল রোগের মহঔষধও বলা হয়ে থাকে। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সঃ) বলেছেন, “তোমরা কালোজিরা ব্যবহার করবে, কেননা এতে একমাত্র মৃত্যু ব্যতীত সর্ব রোগের মুক্তি রয়েছে”।
সত্যি তাই, কালোজিরের মধ্যে রয়েছে নাইজেলোন, থাইমোকিনোন, লিনোলিক অ্যাসিড, ওলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, আয়রন, জিংক, ম্যাগনেশিয়াম ,ফসফেট, সেলেনিয়াম, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি ২, নায়াসিন, ভিটামিন-সি, ফসফরাস, কার্বোহাইড্রেট। সুস্থ থাকতে তাই প্রতিদিন কালোজিরা খাওয়া উচিৎ।
শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতেই নয়, আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিৎসাতেও কালোজিরার ব্যবহার হয়। কালোজিরার বীজ থেকে একধরণের তেল তৈরি হয়, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও কালোজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে ৷ জেনে নিন কালোজিরার বিভিন্ন উপকারিতা সম্পর্কেঃ
১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে কালোজিরা ও কালোজিরার তেল। নিয়মিত কালোজিরা খেলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সতেজ থাকে। এতে করে যে কোনও জীবানুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দেহকে প্রস্তুত করে তোলে এবং সার্বিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি করে।
২. বাতের ব্যাথায় আরাম পেতে, ব্যথার জায়গা ভাল করে ধুয়ে পরিষ্কার করে কালোজিরার তেল মালিশ করুন। এক চা- চামচ কাঁচা হলুদের রসের সঙ্গে ১ চা চামচ কালোজিরার তেল খান।
৩. সর্দি-কাশিতে আরাম পেতে, এক চা চামচ কালোজিরার তেলের সঙ্গে ১ চা চামচ মধু বা এক কাপ লাল চায়ের সঙ্গে আধ চা চামচ কালোজিরের তেল মিশিয়ে দিনে তিনবার খান। পাশাপাশি, এক চা-চামচ কালোজিরার সঙ্গে তিন চা-চামচ মধু ও দুই চা-চামচ তুলসি পাতার রস মিশিয়ে খেলে জ্বর, ব্যথা, সর্দি-কাশি কমে। বুকে কফ বসে গেলে কালিজিরে বেটে, মোটা করে প্রলেপ দিন একই সাথে ।
৪. ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রনে রাখতে প্রতিদিন সকালে দু'কোয়া রসুন চিবিয়ে খেয়ে, সারা শরীরে কালোজিরার তেল মালিশ করে রোদে আধ ঘণ্টা বসে থাকুন। পাশাপাশি ১ চা চামচ কালোজিরার তেলে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে খেলেও ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৫. কালোজিরা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও খুব উপকারী। এটি রক্তের গ্লুকোজ কমিয়ে দেয়। এতে করে কালোজিরা ডায়াবেটিক নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করে।
৬. যারা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য কালোজিরা অনেক বেশি উপকারী। প্রতিদিন কালোজিরার তেল অথবা ভর্তা রাখুন খাদ্য তালিকায়। কালোজিরা হাঁপানি বা শ্বাস কষ্টজনিত সমস্যা দূর করে।
৭. নিয়মিত কালোজিরা খেলে দেহে রক্ত সঞ্চালন ঠিকমতো হয়। এতে করে মস্তিস্কে রক্ত সঞ্চালনের বৃদ্ধি ঘটে; যা আমাদের স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
৮. কালোজিরার তেল আমাদের দেহে বাসা বাঁধা দীর্ঘমেয়াদী রিউমেটিক এবং পিঠে ব্যথা দূর করতে সাহায্য করে।
৯. নিয়মিত কালোজিরা খাওয়ালে দ্রুত শিশুর দৈহিক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটে। কালোজিরা শিশুর মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও অনেক কাজ করে।
১০. যেসব মায়েদের বুকে পর্যাপ্ত দুধ নেই, তাদের মহৌষধ কালিজিরা। প্রসূতি মায়েরা ১ চা-চামচ কালোজিরার তেল সমপরিমাণ মধুসহ দৈনিক ৩বার করে নিয়মিত খেলেও শতভাগ উপকার পাওয়া যায়।
এছাড়াও নিয়মিত কালোজিরার তেল সেবনে চুলের গোড়ায় পুষ্টি ঠিকমতো পায়, ফলে চুলের বৃদ্ধি ভালো হয় এবং চুল পড়া বন্ধ হয়। অনেকেরই চুল পড়া, দুর্বল চুল, শুষ্ক চুল ইত্যাদি নানা রকম সমস্যা থাকে। এক্ষেত্রে সপ্তাহে কয়েকবার কালিজিরার তেলের ব্যবহার চুলের সমস্যাকে দূর করতে পারে।

আলাল তেল কল(Alal Oil Mill)
 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

ভোজ্য তেলের ইতিহাস কি বলে !

বাংলাদেশ ১৯৬০ সাল পর্যন্ত ভোজ্য তেল ও চর্বিতে স্বয়ংসম্পূর্ন ছিল। তখন সরিষার তেল বাংলাদেশে প্রধান ভোজ্য তেল হিসেবে ব্যবহৃত হত, যা...